ই-পেপার শনিবার ১৮ মে ২০২৪
শনিবার ১৮ মে ২০২৪

গরমে ফার্মেসিতে নষ্ট হচ্ছে ওষুধের মান, কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি
প্রকাশ: রবিবার, ৫ মে, ২০২৪, ১২:৪৭ এএম  (ভিজিট : ১৯৮)

দেশে ২ লাখ ৩২ হাজার ৫৩৫টি নিবন্ধিত ফার্মেসি রয়েছে। তার মধ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রয়েছে মাত্র ৫২৮টিতে। এর বাইরেও নিবন্ধনহীন অসংখ্য ফার্মেসি রয়েছে। ৯০ শতাংশেরই নেই যথাযথ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। এতে করে এসব ফার্মেসিতে সংরক্ষিত সাধারণ ওষুধের পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিক, টিকা, ইনসুলিন, রোগ নির্ণয়ের কিট ও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার উপকরণের মান নষ্ট হচ্ছে। মানহীন এসব ওষুধ জীবনরক্ষার পরিবর্তে জীবননাশের কারণ পর্যন্ত হতে পারে। এক মাস ধরে চলা তাপপ্রবাহে বিষয়টি আরও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ফার্মেসিতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের টিকা, ইনসুলিন, অ্যান্টিবায়োটিক, অয়েন্টমেন্ট, জেল, ডায়াগনসিস কিট, ব্লাড প্রোডাকটের মতো প্রয়োজনীয় ওষুধ রয়েছে। বাজারে থাকা বেশিরভাগ ওষুধের মোড়কের গায়ে ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করার নির্দেশনা রয়েছে। গত এক মাস গড় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রিও অতিক্রম করছে। এ ক্ষেত্রে ফার্মেসিতে শীতাতপ ব্যবস্থা না থাকায় ওষুধ গুণগত মান হারাচ্ছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলমান তাপপ্রবাহ এবং বেশিরভাগ ওষুধের দোকানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকায় একদিকে যেমন ওষুধের কার্যকারিতা হারানোর পাশাপাশি গুণগতমান নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে ওইসব ওষুধ সেবনের ফলে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। দেশের জাতীয় ওষুধ নীতি-২০১৬-এ বলা হয়েছে, প্রত্যেক ওষুধের দোকানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং রেফ্রিজারেটর থাকা বাধ্যতামূলক।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ বলেন, আমাদের দেশের প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ফার্মেসিতেই নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণ ব্যবস্থা নেই। ওষুধের মোড়কে যেমন ‘এক্সপায়ার ডেট’ উল্লেখ থাকে, তেমনি নির্দিষ্ট কোনো তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয় সেটিও লেখা থাকে। এ তাপমাত্রার কম বা বেশি হলে ওষুধের কার্যকারিতা থাকে না, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য চরম হুমকি।

আমাদের দেশে বেশিরভাগ ফার্মেসিতে ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণের যথাযথ ব্যবস্থা নেই। যেকোনো ওষুধ জীবন রক্ষাকারী। যারা ওষুধ তৈরি করেন, যারা বিক্রি করেন, যারা সেবন করেন তাদের মধ্যে মান নিয়ন্ত্রণ রক্ষার প্রবনতা খুব কম। কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা ওষুধ যখন বিক্রয়কেন্দ্রগুলোয় সরবরাহ করেন তখনও তারা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় তা বহন করেন না, যে ফার্মেসিতে ওষুধ সরবরাহ করা হলো তা তারা মান নিয়ন্ত্রণ করছেন কি না তার খোঁজও রাখেন না। 

এমনকি যারা সেবনের জন্য কিনে নিয়ে যান তারাও মান নিয়ন্ত্রণে সজাগ নন। এতে করে ওষুধের মান নষ্ট হচ্ছে, কার্যকারিতা হারাচ্ছে। এতে করে যিনি ওষুধ খাচ্ছেন, তিনি উপকৃত না হয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন। তাই ফার্মেসিগুলোতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি। যেসব ফার্মেসি এটা মানছেন না তাদের নিবন্ধন বাতিল করা উচিত বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করে। এতে করে উৎপাদক ও ফার্মেসি মালিকরা সচেতন হবেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

সময়ের আলো/আরএস/ 





https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close