ই-পেপার রোববার ১৯ মে ২০২৪
রোববার ১৯ মে ২০২৪

জনবল সংকটে খুঁড়িয়ে চলছে সৈয়দপুর রেল কারখানা, উৎপাদন ব্যাহত
প্রকাশ: রবিবার, ৫ মে, ২০২৪, ৭:০৩ পিএম  (ভিজিট : ৪৬০)
যাত্রী ও মালবাহী মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার কোচ মেরামতে সক্ষম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা জনবল সংকটে ধুকছে। দীর্ঘদিন সচল না থাকায় বহু মূল্যবান মেশিনপত্র ধ্বংস হতে চলেছে। ফলে মেরামতের অপেক্ষায় থাকা কিছু লক্কড়-ঝক্কর কোচ সংযোজন করে আন্তঃনগর ও মেইল ট্রেনগুলো চালাতে বাধ্য হচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে চলাচল করছে যাত্রীবাহী আন্ত:নগর এক্সপ্রেস ট্রেন ৬৬টি ও মেইল এক্সপ্রেস ৬০টি। এর মধ্যে মিটার গেজ ২৪৭টি ও ব্রডগেজ ৫৭১টি কোচ জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও মালামাল পরিবহনে ৯৫৬টি ব্রড গেজ ও ২০০টি মিটার গেজ চলাচল করছে। এরমধ্যে ২০০৬ সালে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানিকৃত সাদা ৫০টি ব্রডগেজ, লাল সবুজ ১০০টি ব্রডগেজ ও ৫০টি মিটার গেজ কোচ রয়েছে। এর পাশাপাশি ভারতীয় লাল সবুজ রংয়ের ১২০টি কোচ সংযোগ হয়ে বিভিন্ন রুটে চলাচল করছে।

সূত্রটির মতে, ৪৫ বছর আগে জার্মানি, ডেনমার্ক, পাকিস্তান থেকে আমদানি করা ব্রডগেজ ৪৪৮টি কোচ রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী এ সকল কোচ প্রতিবছর ও আন্তঃনগর এক্সপ্রেস এবং মেইল এক্সপ্রেস কোচগুলো দেড় বছর পর এবং ওয়াগন ৩ বছর পরপর মেরামতের বিধান রয়েছে রেলওয়েতে। এ জন্য মেরামতের জন্য যাত্রীবাহী কোচগুলো নেওয়া হয় কারখানায়। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ২৬টি সোপে (উপ-কারখানা) স্বল্প জনবল দিয়ে কোচ ও ওয়াগন মেরামতের কাজ করা হয়। তবে কারখানায় স্বল্প পরিসরে মেরামত কাজ চললেও বিভিন্ন সোপের ৭৪৯টি মেশিনের মধ্যে দক্ষ মেশিনিষ্টের অভাবে ৬০০ মেশিন চালানো সম্ভব না হওয়ায় বিকল হতে চলেছে। যার মূল্য কয়েক হাজার কোটি টাকা।

সৈয়দপুর রেল কারখানার সূত্র মতে, এক সময় শ্রমিক-কর্মচারী মিলিয়ে ১৫ হাজার জনবল কর্মরত ছিল। কিন্তু ১৯৯২ সালে গেল্ডেন হ্যান্ড শেকের মাধ্যমে অর্ধেক দক্ষ শ্রমিক বিদায় দেওয়া হয়। বর্তমানে এই কারখানায় মঞ্জুরীকৃত পদে দুই হাজার ৮৫৯ জন থাকলেও রয়েছে মাত্র ৬২১ জন শ্রমিক। এতে শতকরা মাত্র ২০ ভাগ জনবল দিয়ে বছরে মাত্র ৫০০ কোচ ও ওয়াগন আউট টার্ন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

ক্যারেজ সোপের ইনচার্জ মমিনুল ইসলাম জানান, চাহিদানুপাতে জনবল থাকলে বিদেশ থেকে কোচ আমদানির প্রয়োজন হত না। এতে প্রতি বছর কোচ আমদানি থেকে শত কোটি টাকা সাশ্রয় হত রেলওয়ের। একই অবস্থা বিরাজ করছে ওয়াগন সোপেও। সেখানে প্রতি বছর আড়াই থেকে ৩০০ ওয়াগন মেরামতের চাহিদা দেওয়া হলেও জনবল সংকটের কারণে আউট টার্ন সম্ভব হচ্ছে মাত্র ২০০ ওয়াগন।

ওয়াগন সোপের ইনচার্জ নিজামুল হক জানান, তার সোপে কর্মরত ছিল ১৯৩ জন। বর্তমানে কাজ করছে মাত্র ৪৯ জন। এই স্বল্প সংখ্যক জনবল ও কাঁচামালসহ অন্যান্য সংকটের মধ্যে চলছে ওয়াগন মেরামতের কাজ।

চিলাহাটি থেকে খুলনা, রাজশাহী ও অন্যান্য রুটে চলাচলকারী আন্ত:নগর এক্সপ্রেস ট্রেনের কোচগুলোতে দেখা যায়, কোচগুলোর ভেতরে বেহাল দশা। অনেক কোচের জানালা খুলে না দরজা ভাঙ্গা। ফ্যান, লাইটিং সিস্টেম অকেজো। বাথরুমের ফিটিংস ভালো নেই। ঝাপসা আয়না। কমোট ব্যবহারের অনুপযোগী। পানি সরবরাহের লাইন অচল। 

সৈয়দপুর রেলওয়ে ষ্টেশন মাষ্টার ওবায়দুর রহমান রতন জানান, সৈয়দপুর থেকে ৮ জোড়া ট্রেন চলাচল করছে। বরেন্দ্র ছাড়া সব ট্রেনে মেরামত কৃত কোচ সংযোজন করা হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ফিটনেস বিহীন কোচগুলো কারখানায় মেরামতের জন্য পাঠায় সংশ্লিষ্টরা।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসিম কুমার তালুকদার বলেন, ওভারডিউ কোচগুলো সিরিয়াল মতে কারখানায় পাঠানো হয়। তবে বড় ধরণের সমস্যা হলে সেগুলো ইয়ার্ডে রাখা হয়। আর অভ্যন্তরীণ ফিটিংস বা অন্যান্য সমস্যা হলে যুক্তই থাকে। তবে কারখানায় জনবল নিয়োগ দিলে মেশিনপত্র সচল থাকবে।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  জনবল সংকট   উৎপাদন ব্যাহত   সৈয়দপুর রেল কারখানা  




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close