ই-পেপার মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর ২০২৪
মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর ২০২৪

অন্যকে অভিশাপ দেওয়ার পরিণাম
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:২৮ পিএম  (ভিজিট : ৩০৫২)
মুফতি আতিকুল্লাহ বিন আসাদ
কোনো মানুষ, প্রাণী বা প্রাকৃৃতিক কোনো বস্তুকে অভিশাপ দেওয়া কবিরা গুনাহ। এটা মুমিনের কাজ নয়। মনে রাখতে হবে সব কিছুই মহান আল্লাহর সৃষ্টি। একমাত্র তিনিই সবকিছুর মালিক। কোনো কিছুর মালিক আমরা নই। এমনকি একটি গাছের শুকনো পাতাও মানুষ সৃষ্টি করতে পারে না। সুতরাং কোনো কিছুকে অভিশাপ দেওয়ার কোনো রকম অধিকার মানুষের নেই। আল্লাহর রাসুলুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা একে অপরকে আল্লাহর লানত, তার গজব ও জাহান্নামের অভিশাপ দিয়ো না।’ (তিরমিজি : ১৯৭৬)।
অন্যকে অভিশাপ দেওয়া কোনো ঈমানদারের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। আল্লাহর রাসুল (সা.) কাউকে লানত বা অভিশাপ দেওয়াকে তাকে হত্যা করার সমতুল্য বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, ‘কোনো ঈমানদার ব্যক্তিকে অভিশাপ দেওয়া তাকে হত্যা করার সমতুল্য।’ (বোখারি : ৬০৪৭)। অভিশাপকারী আখেরাতে আল্লাহর দরবারে কোনো মর্যাদা পাবে না।
এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন অভিশাপকারীরা সুপারিশ করতে পারবে
না। এবং সাক্ষ্যপ্রদানও করতে পারবে না।’ (মুসলিম : ২৫৯৮)।
বর্তমান সমাজে দেখা যায়, অনেকেই অন্যদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হয়ে পড়ে। ঝগড়া করার সময় একে অপরকে গালি-গালাজ ও অভিশাপও বর্ষণ করে থাকে। অথচ এক মুসলমান অন্য মুসলমানকে লানত বা অভিশাপ দেওয়া সর্বাবস্থায় হারাম ও কবিরা গুনাহ। হজরত আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ঈমানদার ব্যক্তি কখনও দোষারোপকারী ও নিন্দাকারী হতে পারে না, অভিসম্পাতকারী হতে পারে না, অশ্লীল কাজ করে না এবং কটুভাষীও হয় না।’ (তিরমিজি : ১৯৭৭)। নির্দিষ্ট কোনো অমুসলিমকেও লানত করা যাবে না, যতক্ষণ না কুফরি অবস্থায় তার মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হবে। তবে কুফরি অবস্থায় কোনো ব্যক্তির মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত জানা থাকলে তার ওপর লানত করার অবকাশ রয়েছে। (ফাতাওয়ে শামি : ২/৮৩৬)।
যে লানত বা অভিশাপ দেবে, সে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি অভিশাপের উপযুক্ত না হয়, তাহলে এই অভিশাপ তার দিকে যায় না। বরং অভিশাপকারীর দিকেই প্রত্যাবর্তিত হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো বান্দা কোনো ব্যক্তিকে অভিশাপ দেয়, তখন অভিশাপ আকাশে চলে যায়, আকাশের দরজাগুলো তার জন্য বন্ধ হয়ে যায়, অতঃপর তা জমিনের দিকে নেমে আসে। তখন জমিনের দরজাগুলোও তার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়, অতঃপর তা ডানে বাঁয়ে ঘুরতে থাকে, যখন কোনো উপায় না পায়, তখন যাকে অভিসম্পাত করা হয়েছে, সে যদি এর যোগ্য হয়, তাহলে তার প্রতি পতিত হয়। অন্যথায় অভিশাপকারীর দিকেই ধাবিত হয়।’ (আবু দাউদ : ৪৯০৭)। তাই রাগ হলেই কাউকে অভিশাপ দিতে নেই। বরং তার জন্য হেদায়েতের দোয়া করা উচিত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এ ধরনের কাজ থেকে হেফাজত করুন। আমিন।
লেখক : খতিব, রোশাদিয়া শাহী জামে
মসজিদ, উত্তরা, ঢাকা








সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close