আর কয়দিন পরই উপজেলা নির্বাচন। এই নির্বাচনে যদিও দলীয় কোনো প্রার্থী নেই তারপরও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা দলের সমর্থন চান। তারা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের দ্বারে দ্বারে ধরনা দিচ্ছেন।
একদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে দৌড়ঝাঁপ বেড়েছে সীতাকুণ্ড উপজেলার আগ্রহী প্রার্থীদের। অন্যদিকে যত দিন গড়াচ্ছে ততই নতুন নতুন নাম যোগ হচ্ছে প্রার্থী তালিকায়। যদিও আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের প্রার্থীদের তৎপরতা এখনও দেখা যায়নি সীতাকুণ্ডে।
সীতাকুণ্ডে বিগত দুই নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম আল মামুন। সদ্য সমাপ্ত সংসদ নির্বাচনে তিনি পদত্যাগ করে সংসদ সদস্য নির্বাচন করায় বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ভাইস চেয়ারম্যান জয়নব বিবি জলি।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ঘোষণা আসার পর থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের শুরু হয়েছে দৌড়ঝাঁপ। সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে যারা আছেন তারা হলেন-উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যুব মহিলা লীগ নেত্রী জয়নব বিবি জলি, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন ছাবেরী, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আ ম ম দিলশাদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইউপি চেয়ারম্যান মো. সালাউদ্দিন আজিজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান রেহান উদ্দিন, ইউপি চেয়ারম্যান মো. ছাদাকাত উল্লাহ মিয়াজি, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মো. ইদ্রিস ও উত্তর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাজাহান।
নির্বাচন করতে ইচ্ছুক বেশির ভাগ নেতাই জানিয়েছেন দলীয় সমর্থন পেলে নির্বাচন করবেন।
উপজেলা নির্বাচনে দলীয়ভাবে প্রার্থিতা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ-এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, দলীয়ভাবে প্রতীক না দিলেও কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দিতে পারে। সেই আভাস পেলেই নির্বাচনে লড়বেন তারা। দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজেদের প্রার্থিতার কথা জানান দিচ্ছেন সবাই। তা ছাড়া চায়ের আড্ডায় কিংবা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীরা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা জানান দিচ্ছেন বিভিন্নভাবে ।
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন সাবেরী বলেন, আমি ছাত্র রাজনীতি থেকে দলের জন্য কাজ করেছি। গত ১০ বছর এলাকায় উন্নয়নকাজে সম্পৃক্ত ছিলাম। এলাকার জনগণের সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়েছে। তাই দলের কাছে এবার চেয়ারম্যান পদে সমর্থন চাইব।
অন্য প্রার্থী বর্তমান জেলা পরিষদের সদস্য আ ম ম দিলশাদ বলেন, উপজেলার ৯০টি ওয়ার্ড ও পৌর মেয়র এবং ইউপি চেয়ারম্যানদের ভোটে দুবার চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। এরপর গত ৬ বছর সীতাকুণ্ডের মসজিদ, মাদরাসা, মন্দির, বিভিন্ন শিক্ষা ও সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছি। এ ছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সীতাকুণ্ড আসনে নৌকা প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ছিলাম। এলাকায় সর্বস্তরের ভোটারদের কাছে আমার জনপ্রিয়তা রয়েছে। তাই দলের কাছে মনোনয়ন চাই।
উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আগ্রহী উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। মূল দল থেকে কোনোদিন বিচ্যুত হইনি। তাই দল থেকে মনোনয়ন চাই।
বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) জয়নব বিবি জলি বলেন, আমি ১০ বছর একটানা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করেছি। উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে এস এম আল মামুন পদত্যাগ করলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হয়ে দায়িত্ব পালন করছি। বিভিন্ন সময়ে জনপ্রতিনিধি হয়ে ১৫ বছর এলাকার উন্নয়নে কাজ করেছি। আওয়ামী লীগের দলীয় সমর্থন পাওয়ার বিষয়ে আমি আশাবাদী।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশমাতৃকাকে স্বাধীন করার জন্য যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন দাবি আদায়ের কাজ করেছি। আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে দলীয় সমর্থন চাইব।
বাড়বকুণ্ড ইউপি চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লা মিয়াজী বলেন, ১০ বছর আমি এলাকার উন্নয়নে কাজ করেছি। দলের সাংগঠনিক কাজে সবসময় ছিলাম। চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন চাইব, তবে দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং শিরোধার্য।
বারৈয়াঢালা ইউপি চেয়ারম্যান রেহান উদ্দিন রেহান বলেন, আমি এলাকার পরপর তিনবারের নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান। দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করতে বিভিন্ন সময় আন্দোলন-সংগ্রামে দলের পাশে ছিলাম। আমিও দলের সমর্থন চাইব।
ইউপি চেয়ারম্যান এইচ এম তাজুল ইসলাম নিজামী ও সালাউদ্দিন আজিজ বলেন, আমরা দুবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নকার্যক্রম পরিচালনা করেছি। আমরা দলের কাছে মনোনয়ন চাইব।
উত্তর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সীতাকুণ্ড ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম, সর্বশেষ উত্তর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হয়ে দায়িত্ব পালন করছি। এখন এলাকার জনগণের জন্য কাজ করতে চাই।
অন্যদিকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য এস এম আল মামুন বলেন, বড় রাজনৈতিক দল থেকে একাধিক নেতা দলের সমর্থন পেতে আগ্রহ দেখাবেন-এটাই স্বাভাবিক। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার নৌকা প্রতীক এবং দলীয় মনোনয়ন থাকবে না। তাই দলের যে কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তবে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতার বিষয়ে কেন্দ্র থেকে এখনও কোনো দিকনির্দেশনা আসেনি। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী দলীয় প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে।
আর সীতাকুণ্ড উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. কমল কদর বলেন, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে বিএনপি। উপজেলা বা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেই। তাই দলীয়ভাবে কোনো প্রার্থী থাকবে না বলে জানান তিনি।
সময়ের আলো/আরএস/
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
পশ্চিমবঙ্গে বজ্রপাতে নিহত ১১, জনমনে আতঙ্ক
স্বপ্ন আর প্রত্যাশা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে টাইগাররা
স্বপ্নার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের ১৫ দিনেও খুনি চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ 
উচ্চশিক্ষা অর্জনে নরওয়ে যাচ্ছে চুয়েটের ৮ শিক্ষার্থী
সাংবাদিক-পুলিশের উপর হামলাকারী সেই ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত
শিক্ষক নিবন্ধনের ফল নিয়ে ঝগড়া, স্ত্রীর মরদেহ বিছানায় স্বামী পলাতক
ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন শুসেন শীল
এসআই মিজানের ফাঁদ পাতা ভুবন