ই-পেপার রোববার ১৯ মে ২০২৪
রোববার ১৯ মে ২০২৪

ব্যাংক খাতে শঙ্কা আরও বাড়ছে, দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি
প্রকাশ: বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১:২৪ এএম  (ভিজিট : ২৪৮)
খেলাপি ঋণ নিয়ে চলছে নানা ছলচাতুরি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক খেলাপি ঋণের যে পরিসংখ্যান দিয়ে থাকে, তার চেয়ে প্রকৃত খেলাপি ঋণ অনেক বেশি। এ কারণে দিন দিন বাড়ছে খেলাপি ঋণের বোঝা। ঋণ পুনঃতফসিলীকরণের মাধ্যমে খেলাপি ঋণের বড় একটি অংশ খেলাপির তালিকার বাইরে থাকে। আর এ খেলাপি ঋণ ও অনিয়ম-দুর্নীতির কারণেই অনেক ব্যাংক দুর্বল হয়ে গেছে। এখন দুর্বল ব্যাংককে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হচ্ছে। এটিও ব্যাংক খাতের জন্য আরেক নতুন সংকট তৈরি করবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। শুধু তা-ই নয়, দুর্বল ব্যাংকগুলো একীভূত করার ফলে ব্যাংক খাতে একদিকে যেমন শঙ্কা আরও বাড়বে তেমনি এ খাতে সৃষ্টি হবে বিশৃঙ্খলা। যারা সচ্ছল ব্যাংকগুলোকে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে রুগ্ন করে দিয়েছে, তাদের শাস্তির আওতায় আনার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো রকম উদ্যোগ না নেওয়ায় ব্যাংক খাতে হতাশা নেমে এসেছে। 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিনের এ পুঞ্জীভূত সংকট বাড়তে বাড়তে দেশের ব্যাংক খাতকে একেবারে খাদের কিনারে নেওয়া হয়েছে। এখন অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে দুর্বল হওয়া ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হচ্ছে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একীভূত করলেই কি সংকট দূর হবে, নাকি দুর্বল ব্যাংকের বোঝা চাপিয়ে সবলদেরও দুর্বল করে দেওয়া হবে? যাদের কারণে ব্যাংকগুলো দুর্বল হলো তাদের কি শাস্তির আওতায় আনা হবে? এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের বৃহত্তর স্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৯ শতাংশ। ব্যাংকের মধ্যে সুশাসনের অভাব ও ব্যাপক ঋণ অনিয়মের কারণে বেশ কয়েকটি ব্যাংক দুর্বল হয়ে পড়েছে। ফলে ব্যাংকিং খাতের প্রতি আমানতকারীদের আস্থাও কমে গেছে। দুর্বল ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। ওইসব ব্যাংকে গ্রাহকের আমানত এবং কর্মরতদের কী হবে, এ বিষয়ে রয়েছে নানা শঙ্কা। 

আমাদের দেশে খেলাপি ঋণচর্চা চলছে বেশ কয়েক দশক ধরে। যেকোনো সুষ্ঠু ব্যাংকিং ব্যবস্থায় যে বিষয়টি অনিয়ম হিসেবে বিবেচিত হয়, সেটি আমাদের দেশে একটি নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। অভিজ্ঞমহল, দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাংক খাতের সংস্কারের কথা বলে আসছেন। তাদের সেই প্রস্তাব তেমনভাবে আমলে নেওয়া হয়নি। বরং  লুটপাটের মাধ্যমে রুগ্ন করে দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে নিরাপদ করতে চাইলে যারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণখেলাপি হয়েছেন, পুনঃতফসিলীকরণের মাধ্যমে আরও ঋণ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এ খাতে আরও ঝুঁকি বাড়বে বলে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছেন। ব্যাংকিং খাতে এই সংকট সমাধানে বিষয়টিকে গুরুতর সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করে তা মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। সংশ্লিষ্টরা এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

সময়ের আলো/জেডআই




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close