ই-পেপার শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪
শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪

মানব পাচার সিন্ডিকেটে রোহিঙ্গাসহ ৬০ জন, জড়িতদের আইনের আওতায় আনুন
প্রকাশ: সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১২:৩০ এএম  (ভিজিট : ২৫০)
সুন্দর জীবনের স্বপ্ন নিয়ে প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ বাংলাদেশ থেকে বিদেশ পাড়ি দেয়। বৈধ বা অবৈধ পথে। এক্ষেত্রে সব হারানোর ঝুঁকি থাকে। কখনো টাকা-পয়সা, কখনো জীবন। এ নিয়ে গণমাধ্যম তোলপাড় হলেও মানব পাচার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ কিংবা ইতিবাচক ভূমিকা নিতে দেখা যায় না সংশ্লিষ্টদের। ২০১৯ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত ১৯টি মানব পাচারের মামলা হয়। মামলাগুলোর বিচারিক কার্যক্রম চলমান।

কয়েক বছর হলো মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে রোহিঙ্গারা। সাগরপথে যে মানব পাচার হয়ে থাকে, তার অধিকাংশ বাংলাদেশ-মিয়ানমারের অসাধু পাচারকারীদের হাত ধরে। 

ইতিমধ্যে কক্সবাজারে মানব পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় রোহিঙ্গাসহ স্থানীয়দের মধ্যে উৎকণ্ঠা বাড়ছে। এরই মধ্যে মানব পাচারের সঙ্গে জড়িতদের তালিকা করেছে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা। তালিকায় ৩০ জন রোহিঙ্গা ও ৩০ জন স্থানীয় বাসিন্দার নাম এসেছে। আর ভুক্তভোগীদের মধ্যে রোহিঙ্গা সদস্যদের সংখ্যাই বেশি।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোহিঙ্গাসহ বাংলাদেশি মানব পাচারকারী চক্রটি মিয়ানমারের নৌবাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিজিপির সংশ্লিষ্টতায় এবং সেখানকার দালাল চক্রের মাধ্যমে নৌপথে প্রথমে থাইল্যান্ড বা ইন্দোনেশিয়া নিয়ে যায়। সেখান থেকে বিমানযোগে বৈধভাবে অন্যান্য দেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আদায় করে লাখ লাখ টাকা। 

জানা যায়, আশ্রয় শিবিরের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কর্মহীন অবস্থায় বসবাস করায় কাজের সন্ধান করতে গিয়ে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে রোহিঙ্গারা।  কক্সবাজারের টেকনাফ এবং উখিয়ায় সাগরপথে যাওয়া স্বল্পসংখ্যক রোহিঙ্গা স্বজনদের কাছে পৌঁছাতে পারলেও এদের অনেকেই সাগরে ট্রলারডুবিতে মারা যায়। আবার কেউ কেউ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার এবং উদ্ধারও হন। 

এদিকে টেকনাফ স্থলবন্দরে দৈনিকভিত্তিতে পণ্য ওঠানো-নামানোর কাজে নিয়োজিত সহস্রাধিক শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ শ্রমিক রোহিঙ্গা। যারা এসব রুটে মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গারা সাগরপথে মানব পাচারকারীদের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে যাওয়ার সময় পুলিশ তাদের আইনের আওতায় এনেছে। আমরা পাচারকারীদের তালিকা করেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় রোহিঙ্গাসহ মানব পাচার অনেক কমেছে। পুলিশ এ বিষয়ে সজাগ রয়েছে।

দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে উন্নত জীবনের মোহে বেঘোরে প্রাণ দিচ্ছে যেসব মানুষ, তাদের স্বজনদের কান্নায় ভারী হচ্ছে বাংলাদেশের পরিবেশ। মানব পাচারকে রাষ্ট্রের একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখছেন অভিজ্ঞমহল। দালাল এবং যারা জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছে তারাও এ দায় এড়াতে পারে না। সংশ্লিষ্টদের অবশ্যই এই অবৈধ মানব পাচার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এই অবৈধ কাজে জড়িতদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা জরুরি। তা না হলে চলতেই থাকবে মানব পাচার। বাড়বে সাগরে মৃতের সংখ্যা। এ অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু আমাদের কাম্য নয়। সংশ্লিষ্টরা মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close