প্রকাশ: শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৬:০৩ এএম আপডেট: ২৩.০৯.২০২২ ৬:০৮ এএম | অনলাইন সংস্করণ Count : 131
কয়েক মাস অনাবৃষ্টির পর গত তিন দিন থেমে থেমে ভারী বর্ষণে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছেন নড়াইলের কালিয়ার কৃষকরা। পানিতে ভরে উঠেছে আবাদি জমিসহ ডোবা ও নালাগুলো। বেঁচে গেছে কৃষকের সেচের খরচ এবং কোটি টাকার ডিজেলও।
অবিরাম বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে জমি তৈরিসহ আমনের চারা রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। শুকিয়ে যেতে বসা রোপণকৃত আমনের চারাও ফিরে পেতে শুরু করছে নবজীবন। সব মিলিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস নিয়েই কোমর বেঁধে নেমেছেন কৃষকরা। জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে ১১ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে পুরো উপজেলায়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২৬ হাজার ৪৩৫ হেক্টর আবাদযোগ্য জমি রয়েছে কালিয়ায়। তার মধ্যে চলতি বছর আমন চাষের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে আবার সেচ সুবিধাবহির্ভূত জমির পরিমাণ রয়েছে প্রায় তিন হাজার হেক্টর। এ ছাড়া চার হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদন করা হয়েছে। কাক্সিক্ষত বৃষ্টির কারণে স্থানীয় কৃষকদের প্রায় ৯৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের ১৩০ মেট্রিক টন ডিজেলের সাশ্রয় হয়েছে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছর আমন মৌসুম শুরুর পর থেকে গত কয়েক মাস ধরে অনাবৃষ্টির কারণে প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল আমন চাষিরা জমি তৈরিসহ চারা রোপণ করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন পানি সঙ্কটের কারণে। শুকিয়ে যেতে শুরু করেছিল রোপণ করা ধানের চারাও। যা এখন নতুন জীবন পেতে শুরু করেছে। মৌসুমের শেষে হলেও গত তিন দিনের বর্ষণে ওইসব জমিতে পানি জমায় এবং ডোবা-নালা পানিতে ভরে যাওয়ায় এখন স্বস্তির নিশ^াস ফেলতে শুরু করেছেন কৃষকরা।
উপজেলার কলাবাড়িয়া গ্রামের কৃষক মো. আশিকুজ্জামান বলেন, প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে এ বছর আগেভাগেই চারা রোপণ করেছেন দেড় বিঘা জমিতে। পানির অভাবে সেই চারাগুলো মরতে শুরু করেছিল। বৃষ্টির সুবাদে সেগুলো আবার জীবন্ত হয়ে ওঠছে। এখন তিনি আরও দেড় বিঘা জমি তৈরি করেছেন। এখনই সেখানে চারা রোপণ শুরু করবেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবির কুমার বিশ্বাস বলেন, অনাবৃষ্টির দুর্যোগ কাটিয়ে কাক্সিক্ষত বৃষ্টিতে আমন ধানের চাষ যেমন সহজ হয়েছে, তেমনি পাট নিয়েও দুশ্চিন্তা দূর হয়েছে চাষিদের। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় কৃষকরা প্রায় কোটি টাকার ডিজেল কেনা থেকে রক্ষা পেয়েছে। প্রকৃতির ওপর ভরসা করে ইতোমধ্যে যারা ধানের চারা রোপণ করেছেন এবং যারা রোপণ করতে পারেননি তারাও সুযোগটি কাজে লাগাতে পারবেন।