প্রকাশ: শনিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম (ভিজিট : ১০৯)
নিজস্ব প্রতিবেদক
সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ও জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির সদস্য (সিডিপি) দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশ হলে দেশের রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থাকে। সেই জন্য বাংলাদেশকে এখন থেকে প্রস্তুত হতে হবে। এখন থেকে দরকষাকষিতে নামতে হবে। অর্থাৎ বাংলাদেশকে উদ্যোগী হতে হবে। তিনি শনিবার এলডিসি সম্পর্কিত নানা বিষয়ে টেলিফোনে এক সাক্ষাৎকার এই কথা বলেন।
তিনি জানান, বাংলাদেশ ২০২৪ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে গেলেও, এর কিছু সুযোগ-সুবিধা বেশ কিছুদিন পাবে। বিশেষ করে শুল্কমুক্ত সুবিধা কিছুদিন অব্যাহত থাকবে। তবে সমস্যা হবে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে। এর মধ্যে রয়েছে স্বল্প সুদে ঋণ, বিদেশ যাত্রা ও মেধাস্বত্ব আইনে কড়াকড়ি। তবে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যাবে। দেশটির অর্থনীতির সক্ষমতা সম্পর্কে বিদেশিদের কাছে বার্তা পৌঁছে যাবে। ফলে বিদেশি বিনিয়োগের পথ সুগম হবে। এর পাশাপাশি ব্যক্তি খাতে বৈদেশিক ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। কম সুদে ঋণ পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে তেমন কোনো ঝামেলা হবে না। অর্থ প্রবাহ বাড়বে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।
তিনি বলেন, এই যে করোনাকালে অনেক দেশ এখন থেকেই দরকষাকষি শুরু করেছে। কারণ বিশ^ অর্থনীতির পরিস্থিতি এখন সন্তোষজনক নয়। তাই বাংলাদেশকে এখন থেকেই উদ্যোগী হয়ে দরকষাকষি করতে হবে। শুধু তাই নয়, রফতানিতে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তা এখন থেকে উপলব্ধি করে নামতে হবে নতুন বাজারের সন্ধানে। একই বর্তমানে যে বাণিজ্য সুবিধা বহাল রয়েছে, তারও জন্য দরকষাকষি করতে হবে। আমাদের উচিত হবে দরকষাকষির মাধ্যমে এই সুবিধা ১০ বছর পর্যন্ত পাওয়ার চেষ্টা করা। এ ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়নে জিএসপি প্লাস পাওয়ার সুবিধা চেষ্টা করা। রফতানিসহ বাণিজ্য সম্প্রসারণে দ্বিতীয় মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গঠনের জন্য সুযোগ বের করা। কোনো কোনো দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গঠন করা যায় তা দ্রুত চিহ্নিত করে কাজ শুরু করা উচিত।
কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নেপাল, ভুটানসহ আঞ্চলিক পর্যায়ে যোগাযোগ, বিনিয়োগ ও বাণিজ্য এসব এক সঙ্গে বিবেচনা করে নানা উদ্যোগ নিতে হবে। যোগাযোগ সহজ হলে বাণিজ্য সম্প্রসারণ হবে। তৈরি পোশাকের মতো একক পণ্যের নির্ভরশীলতা কমিয়ে রফতানি পণ্যেও বহুমুখীকরণ করতে হবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিদ্যমান বাজার সুবিধা রক্ষার পাশাপাশি নতুন বাজার ও পণ্য বহুমুখীকরণে সমন্বিত উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই।