ই-পেপার শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ঋণ প্রদানে কোনো অনিয়ম হয়নি: ইসলামী ব্যাংকের এমডি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০৫ এএম আপডেট: ০৬.১২.২০২২ ১২:৩৬ এএম  (ভিজিট : ১৭৭৪)
সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ইসলামী ব্যাংকের ঋণ প্রদান নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়েছে। তবে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা বলেছেন, ঋণ প্রদানের বিষয়ে যেসব অনিয়মের কথা গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে- তার কোনো সত্যতা নেই। ব্যাংকিং নিয়মনীতি মেনেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঋণ দেওয়া হয়েছে। এখানে কোনোরকম ব্যত্যয় ঘটেনি। সময়ের আলোকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

মুনিরুল মওলা বলেন, ‘ঋণ প্রদানে প্রসঙ্গে কথা বলার আগে আমি শুরুতেই একটি প্রেক্ষাপট তুলে ধরতে চাই। ২০১৯ সাল বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই স্বাভাবিক পরিস্থিতি ছিল। ২০২০ সালে এসে বিশ্বব্যাপী হানা দেয় মহামারি করোনা। এ কারণে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব একরকম স্তব্ধ ছিল। আমরা একটি আমদানিনির্ভর দেশ। আমাদের অনেক পণ্য আমদানি করতে হয়। বিশেষ করে খাদ্যদ্রব্য, জ্বালানি, ভোজ্য তেল, চিনি এ রকম পণ্য আমাদের আমদানির করতে হয়। করোনার সময়ে এসব পণ্য আমদানিতে অনেক বিঘ্ন ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রণোদনা ঘোষণাসহ নানা সাহসী পদক্ষেপের কারণে করোনা পরিস্থিতি আমরা বেশ ভালোভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি। ইতিমধ্যে অনেক ব্যবসায়ী ঘুরে দাঁড়িয়েছেন, অনেকে এখনও চেষ্টা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।’
তিনি বলেন, ‘ওই সংকটের সময়ে বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানি একরকম বন্ধ হয়ে যায়। ২০২২ সালের শুরুতে ওই দেশগুলোতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসে। একই সময় দেশেও খাদ্যদ্রব্যসহ অনেক পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। এ অবস্থায় একটি দায়িত্বশীল ও দেশের শীর্ষ বেসরকারি ব্যাংক হিসাবে আমরা খাদ্যপণ্য আমদানিতে সহযোগিতা করতে চেয়েছি এবং খাদ্যপণ্য আমদানির জন্য এলসি ওপেন করেছি। শুধু তাই নয়, দেশে যত সার আমদানি হয় তার ৮০ শতাংশের এলসি আমরা ওপেন করেছি। একইভাবে ভোজ্য তেল, গম এবং চিনির মতো নিত্যপণ্য আমদানিতে আমরা প্রচুর এলসি ওপেন করেছি। কারণ আমরা মনে করেছি এই সময় যদি খাদ্যপণ্য আমদানির বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিতাম তাহলে ভোগ্যপণ্যের বাজারে আরও অস্থিরতা দেখা দিত। পরিস্থিতি এমন হতো যে- পকেটে টাকা আছে কিন্তু পণ্য মিলছে না। যে চিনি এখন ১০০ বা ১১০ টাকায় মিলছে, আমদানি কম হলে হয়তো তা ৫০০ টাকায় কিনতে হতো। দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজারে যাতে এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় তার জন্য আমরা এসব পণ্য আমাদানিকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছি। আমাদের যারা বিশ্বস্ত ক্লায়েন্ট যারা ভোগ্যপণ্য আমদানি করে তাদের মাধ্যমে আমরা পণ্যগুলো আমদানি করিয়েছি। সুতরাং জরুরিভিত্তিতে খাদ্যপণ্য আমদানির জন্য আমরা ওইসব প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়েছি।’

এ ছাড়া আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান পণ্য আমদানি করার পর সেগুলো যেসব প্রতিষ্ঠান সারা দেশে পৌঁছে দেয়- আমরা এ রকম প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়েছি। এসব প্রতিষ্ঠান আমদানিকারকদের কাছ থেকে পণ্য নিয়ে সারা দেশের ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিয়েছি। আমরা এসব প্রতিষ্ঠানের পেছনে বিনিয়োগ করেছি। ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগের ম্যাকানিজমটা এ রকম যে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান এসব ক্ষেত্রে ঋণ নিতে চাইলে এ ব্যাংক থেকে কাউকে ঋণ হিসাবে নগদ ক্যাশ দেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা যেটা করেছি- আমরা আমদানিকারকদের কাছে টাকা দিয়েছি, আমদানিকারকরা পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে পণ্যগুলো দিয়েছে। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সারা দেশে পণ্য বিক্রি করছে এবং তারা পণ্য বিক্রি করে আমাদের দেওয়া ঋণের অর্থ ধীরে ধীরে ফেরত দিচ্ছেন।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- এসব ঋণ প্রদানে অনিয়ম হয়েছে, বেনামি প্রতিষ্ঠানে ঋণ দেওয়া হয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে ব্যাংকিংয়ে যে নিয়মকানুন রয়েছে, দীর্ঘদিন থেকে আমরা এসব নিয়ম মেনে চলছি, সেসব নিয়মকানুন মেনেই ঋণ দেওয়া হয়েছে। ঋণ প্রদানে কোনো অনিয়ম হয়নি। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে টাকা লুটপাটসহ এ ধরনের যেসব শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে বাস্ততার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। ইসলামী ব্যাংকে এ রকম কিছুই ঘটেনি এবং অর্থ লুটপাটের কোনো সুযোগও নেই। কারণ ঋণ দেওয়া থেকে শুরু করে সব কার্যক্রম সার্বক্ষণিক মনিটরিং করি। বিনিয়োগ দিয়েই আমরা আমাদের দায়িত্ব শেষ বলে মনে করি না। আমাদের বিনিয়োগকৃত অর্থে যেসব পণ্য আমদানি করা হয় সেগুলো আমরা মনিটরিং করি। পণ্যগুলো কোথায় থেকে কোথায় যাচ্ছে এবং কোন দিন কোন পণ্য কোথায় বিক্রি হচ্ছে সেসব তথ্যও আমরা সার্বক্ষণিক সংগ্রহ করি। আমাদের বিনিয়োগকৃত টাকা আবার ব্যাংকে আনার ক্ষেত্রে সারা দেশে আমাদের যে নেটওয়ার্ক রয়েছে সেগুলো কাজ করে।’

গণমাধ্যমের ওইসব রিপোর্টের কিছুটা সত্য আছে, কিছুটা অতিরঞ্জিত আছে, আবার কিছুটা একেবারে মিথ্যা তথ্য রয়েছে। বলা হয়েছে- ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে আমরা এক বছরের গ্রেস পিরিয়ড দিয়েছি আসলে আমরা কোনো গ্রেস পিরিয়ড দেয়নি, এটি দেওয়ার সুযোগও নেই। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন ফলো করে এক বছরের জন্য বিনিয়োগ করেছি। এই এক বছরের মধ্যে যখনই তারা পণ্য বিক্রি করবে, তখনই আমাদের বিনিয়াগ করা অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে এবং ফেরত দেবে। এ ক্ষেত্রে আমি খুবই জোর দিয়ে বলতে পারি ব্যবসায়ীরা পণ্য বিক্রি করার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের অর্থ ফেরত দিয়ে দেবে।

আমার কথায় আমি বলেছি রিপোর্টের কিছু বিষয় সত্য রয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- নভেম্বর মাসে আমরা বড় বিনিয়োগ করেছি। এর ব্যাখ্যা হচ্ছে আসলে আমরা প্রতিটি মাসে বা সবসময় বিনিয়োগ করি। নভেম্বর মাসে এসে বিনিয়োগের অর্থ আমাদের বেশি ছাড় করতে হয়েছে। পণ্য আমদানির পরে এসে সারা দেশে পণ্য সরবরাহ করতে এ সময় বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে। এখন কথা হচ্ছে- আমরা কেন খাদ্যপণ্য আমদানিতে এত বিনিয়োগ করলাম। আসলে ইসলামী ব্যাংক দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি ব্যাংক। ইসলামী ব্যাংকের ইক্যুইটি, পেইড অব ক্যাপিটাল এমনকি ইসলামী ব্যাংকে এখনও পর্যন্ত ৪৩ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশের সবচেয়ে কমপ্লায়েন্ট ব্যাংকটি হচ্ছে ইসলামী ব্যাংক। বাংলাদেশের সবচেয়ে সাসটেইনেবল ব্যাংক যদি বলা হয় সেটিও এই ইসলামী ব্যাংক। ২০১৯ সালে ইসলামী ব্যাংক ১৫ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করেছে বা বিনিয়োগ করেছে। আর এই ২০২২ সালে এসে সে বিনিয়োগ এখন তিন বা ৪৫ হাজার কোটি টাকার করার কথা। কারণ ২০১৯ সালের পণ্যমূল্য আর ২০২২ সালের পণ্যমূল্যে আকাশ-পাতাল তফাত। সেখানে আমরা এখন বিনিয়োগ করেছি ২৫ হাজার কোটি টাকা। সুতরাং সত্য বিষয়টি হলো- নভেম্বর মাসে এসে অনেকগুলো নন-ফান্ডেড বিল এই সময়ে ফান্ডেড হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, এই সময়টাতে আমদানিকৃত পণ্যগুলো সারা দেশে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা দরকার ছিল। সুতরাং দায়িত্ববোধ থেকে আমরা এ সময় বিনিয়োগ করেছি।

মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক যা কাজ করে তার প্রতিটির রিপোর্ট কিন্তু আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককে দিয়ে থাকি। ব্যাংকের ইসিতে যেগুলো পাস হয়, বোর্ডে যেগুলো পাস হয়- তার সবগুলো সেন্ট্রাল ব্যাংকে যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমাদের সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে। ব্যাংকিং কর্মকাণ্ডের একেবারে শুরু থেকেই মনিটরিং করছে, এখনও করছে। প্রত্যেক দিন আমাদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যদি কোনো অবজারভেশন থাকে সেগুলো আমরা শুনছি, মেনে চলছি এবং তাদের নির্দেশনা আমরা বাস্তবায়ন করছি। সুতরাং আমাদের প্রতিটি কাজ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সর্বদা মনিটরিং করছে বিধায় এখানে অনিয়ম করার কোনো সুযোগ নেই এবং ওইসব ঋণ প্রদনেও কোনো অনিয়ম হয়নি।

তবে আমি একটি বিষয় উল্লেখ করতে চাই- ইসলামী ব্যাংক দেশের শীর্ষ ব্যাংক। এ ধরনের একটি শক্তিশালী ব্যাংকের বিরুদ্ধে কিছু জেলাসি থাকতে পারে কারও কারও। ইসলামী ব্যাংকের যারা ক্লায়েন্ট তারা মার্কেটের সবচেয়ে ভালো ক্লায়েন্ট। এসব বেস্ট ক্লায়েন্টেকে ভাগিয়ে নেওয়ার জন্য কিছু প্রতিযোগিতাও আছে। বাংলাদেশের এমন কোনো বড় ব্যবসায়ী গ্রুপ নেই যাদের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা নেই। সুতরাং এসব ভালো গ্রাহক যাতে আমাদের সঙ্গে না থাকে সে চেষ্টাও থাকতে পারে। এর জন্য হয়তো কেউ কেউ আমাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অপপ্রচার করছেন।

তিনি বলেন, ‘গুজব ছড়ানো হয়েছে- ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে বা মালিকানায় পরিবর্তন হতে যাচ্ছে। ইসলামী ব্যাংক ১৯৮৩ সালে যাত্রা শুরু করে। তখন থেকেই পরিবর্তনটা কিন্তু একটি ক্রমবর্ধমান বিষয় বা সার্বজনীন একটি বিষয়। পরিবর্তন হতেই পারে, কারণ আমরা লিস্টেট কোম্পানি। আমাদের শেয়ার ট্রেডিং হয় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে। এই দুই স্টক মার্কেট থেকে যে কেউ শেয়ার কিনতে পারে। কেউ যদি ১০ টাকার শেয়ার কেনে, তাহলে ব্যাংকে ১০ টাকার মালিকানা তার। শুরুতে আমাদের ব্যাংকে ৭২ ভাগ বিদেশি শেয়ারহোল্ডার ছিলেন, বর্তমানে সেটি ৪৩ ভাগ। এখন প্রশ্ন করতে পারেন, বিদেশি শেয়ারহোল্ডাররা কী চলে গেছেন- জবাব হচ্ছে, নো (না)। তারা এখনও আছেন।

এখনও আমাদের পরিচালনা পর্ষদে ইসলামী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের একজন প্রতিনিধি আছেন। তবে আমি একটি বিষয় ইতিবাচকভাবে নিই সেটি হলো- বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বেড়েছে। যার ফলে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার এখন বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাই কিনেছেন। ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের মালিকানায় পরিবর্তন হয়েছে। এই পরিবর্তনের ফলে ইসলামী ব্যাংক আরও ভালো হয়েছে। কারণ ওই সময় আমাদের ডিপোজিটের পরিমাণ ছিল ৫৮ হাজার কোটি টাকা, আর এখন সেই ডিপোজিট এক লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। ওই সময় আমাদের বিনিয়োগ পোর্টফোলিও ছিল ৪২ হাজার কোটি টাকার মতো। এখন আমাদের বিনিয়োগ সম্প্রসারণ হয়েছে এক লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকার মতো। এই বড় বিনিয়োগ পোর্টফোলিওর কারণে আমাদের লাভের পরিমাণটাও বেশি। এসব কারণে অনেকের নজরে পড়েছে ইসলামী ব্যাংক, কিছু জেলাসি কাজ করছে এখানে। কিছু কুচক্রী মহল ইসলামী ব্যাংকের পেছনে লেগেছে। তবে যে যাই বলুক, যে যাই করুক ইসলামী ব্যাংক চলবে ইসলামী ব্যাংকের গতিতেই। আমরা সবসময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়মনীতি মেনে ব্যাংকিং করে আসছি, আগামীতেও করব।

আরএস/ 


আরও সংবাদ   বিষয়:  ইসলামী ব্যাংক   ঋণ প্রদান  




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close