ই-পেপার রবিবার ৩ নভেম্বর ২০২৪
রবিবার ৩ নভেম্বর ২০২৪

উত্থান-পতন রেকর্ডে কাটল বছর
প্রকাশ: শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:০০ এএম  (ভিজিট : ৩৩৯)
শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাবে বছরজুড়ে অস্থির ছিল দেশের পুঁজিবাজার। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে নানা প্রদক্ষেপ নেওয়া হলেও তার কোনোটাই তেমন কাজে আসেনি। বাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ছিল ক্রেতাশূন্য। 

২০২২ শেষ হচ্ছে আজ। আগামীকাল রোববার নতুন বছরের প্রথম দিন। বছরের প্রথমভাগে (জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি) এবং শেষের দিকে আগস্ট, সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসে পুঁজিবাজারে যে উত্থান দেখা দিয়েছিল, তার স্থায়িত্ব বজায় না থাকায় শেষ দুই মাসের অস্থিরতা নিয়েই শেষ হলো বছর। 

বিদায় নিতে যাওয়া বছরে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মোট ২৪৪ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটি ও সরকারি ছুটি বাদে বিদায়ি বছরে ৬৫৮ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট কেনাবেচা বাবদ লেনদেন হয়েছে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৪৪৭ কোটি ৯৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা। যা পুঁজিবাজারের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন।

পুঁজিবাজারে বছরে মোট লেনদেনে ইতিহাস ছুঁলেও একক কার্যদিবস হিসেবে আড়াই বছরে সর্বনিম্ন লেনদেনের রেকর্ডও আছে বিদায়ি বছরে। বিদায়ি বছরের ২৬ ডিসেম্বর ডিএসইতে ১৯৮ কোটি টাকার লেনদেন হয়। এর আগে ২০২০ সালের ৭ জুলাই ১৩৮ কোটি টাকার কেনাবেচা হয়েছিল। ১৬৯ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার দিনেই এই বিপর্যয় ঘটে। ডিএসইর তথ্য মতে, ২০২২ সালে ডিএসইতে ২৪৪ কার্যদিবসে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৪৪৭ কোটি ৯৩ লাখ ৭০ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। যা গড় লেনদেন ৯৬০ কোটি ৮৫ লাখ ২০ হাজার টাকা। এর আগে ২০১০ সালে গড় লেনদেন ছিল ১ হাজার ৬৪৩ কোটি ৪০ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং ২০২১ সালে গড় লেনদেন ছিল ১ হাজার ৪৭৫ কোটি ২২ লাখ টাকা।

বছরজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন অংশ নেওয়া অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। তাতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৮ দশমিক ১৪ শতাংশ। বছরের শুরুতে ডিএসইএক্স ছিল ৭ হাজার ১০৫ পয়েন্ট, সেখান থেকে ৫৪৯ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট বা ৮ দশমিক ১৪ শতাংশ কমে ৬ হাজার ২০৬ পয়েন্টে দাঁড়ায়।

অপর দুই সূচেকের মধ্যে ডিএস-৩০ সূচক কমেছে ১৩ শতাংশ। ডিএসই ৩০ সূচক আগের বছরের চেয়ে ৩৩৭ দশমিক ২৮ পয়েন্ট বা ১৩ দশমিক ৩২ শতাংশ কমে ২ হাজার ১৯৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়াও শরিয়াহ সূচক কমেছে ৫ শতাংশ।

বিদায়ি বছরের ডিএসইর বাজার মূলধন অর্থাৎ পুঁজি বেড়েছে ৪ লাখ ৪৬ হাজার ৯২২ কোটি ৪৭ হাজার ৩০ হাজার টাকা। সূচক ও অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমলেও ২৫০টি ট্রেজারি বন্ড ডিএসইতে লেনদেন শুরু হওয়ার বাজার মূল বেড়েছে।

ডিএসইর তথ্য মতে, ৩ লাখ ১৪ হাজার ১৪ কোটি ৩২ লাখ ৭০ টাকা বাজার মূলধন নিয়ে ২০২২ সালে ডিএসইর লেনদেন শুরু হয়। এরপর চলতি বছরের ১০ অক্টোবর ২৫০টি সরকারি সিকিউরিটিজ ডিএসইতে তালিকাভুক্ত হয়। তাতে বাজার মূলধনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ লাখ ৭২ হাজার ৫১৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। 

তবে বছর শেষে বাজার মূলধন কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬০ হাজার ৯৩৬ কোটি ৮০ লাখ টাকায়।

ব্লক মার্কেটে লেনদেন হয় ১৪ হাজার ২৫৩ কোটি ১৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। যা মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। এর আগে ২০২১ সালে ব্লক মার্কেটে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১৪ হাজার ৫১ কোটি ৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা, যা ছিল মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। অর্থাৎ ব্লক মার্কেটে আগের বছরের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফ্লোর প্রাইসের চেয়ে ব্লক মার্কেটে ১০ শতাংশ কম দামে শেয়ার কেনার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরপর থেকে ব্লক মার্কেটে শেয়ার কেনাবেচা বেড়েছে।

বিদায়ি বছরের ডিএসইতে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৫৮টি। এর মধ্যে কোম্পানি ৩৫৪টি, মিউচুয়াল ফান্ড ৩৭টি, ডিবেঞ্চার ৮টি, গভর্নমেন্ট ট্রেজারি বন্ড ২৫০টি এবং করপোরেট বন্ড ৯টি। যার বাজার মূলধনের কাঠামো কোম্পানি ৫৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ, মিউচুয়াল ফান্ড দশমিক ৫১ শতাংশ, করপোরেট বন্ড দশমিক ৪৪ শতাংশ, ডিবেঞ্চার দশমিক ০১ শতাংশ এবং গভর্নমেন্ট ট্রেজারি বন্ড ৪১ দশমিক ২৭ শতাংশ।




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close