প্রকাশ: বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৫:২৬ এএম আপডেট: ২০.০৯.২০২৩ ৩:৩৬ পিএম (ভিজিট : ৮১৪)
সুমন মিয়া ওরফে মাসুদ আলম (৪০)। লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের এনায়েতপুর পানপাড়ার বাসিন্দা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য অনেক দিন ধরেই নানা উপায়ে ভিসার চেষ্টা করছিলেন। অতঃপর ভিসা সাক্ষাৎকারের জন্য ডাক পড়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে। কিন্তু ভিসা পাওয়া তো দূরের কথা, প্রযুক্তির সাহায্যে তার ব্যক্তিগত নথি ঘাঁটতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে ‘থলের বিড়াল’। কেননা সুমন মিয়া একজন আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের অন্যতম হোতা। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর সুমনকে আসামি করে মামলা করেছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ বিষয়ে গুলশান থানায় মামলা করেন মার্কিন দূতাবাসের সিকিউরিটি অ্যাটাশে মাইকেল লি। মামলার পর পুলিশ সুমন মিয়াকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা সুমন মিয়া মার্কিন দূতাবাসে যান ভিসা সাক্ষাৎকারের জন্য। সাক্ষাৎকারের সময় মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা তার মোবাইল ফোন পর্যালোচনা করেন এবং ভয়েস রেকর্ডিং আবিষ্কার করেন। সেসব পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সুমন মিয়া একজন মানবপাচারকারী। সেখানে বাংলাদেশি নাগরিকদের দক্ষিণ আফ্রিকায় চলাচল বা অন্যদের পাঠানোর তথ্য পাওয়া যায়। এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে তিনি তার পাঠানো লোকজনকে দক্ষিণ আমেরিকায় (ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা)
যেতে সাহায্য করেন, যাতে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারে।
এ ছাড়া এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, মার্কিন দূতাবাসের অফিস সহকারীরা তার মোবাইল ফোনে মার্কিন দূতাবাসের ভিসা অফিসারের ফটো আবিষ্কার করেন। যা নির্দেশ করে, তিনি ভিসার সাক্ষাৎকারে প্রতারণা করার চেষ্টা করছেন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার কেউ তাকে তার ভিসা সাক্ষাৎকারের প্রশ্নে সাহায্য করেছিল। মার্কিন দূতাবাস আরও জানিয়েছে, সুমনের বিভিন্ন নামে বিভিন্ন ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। মানবপাচারকারী ও পাচারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তিনি ‘মাসুদ আলম’ নাম ব্যবহার করেন এবং ভুয়া নামে তার বাংলাদেশ ব্যাংকেও অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সেই অ্যাকাউন্টে সুমন টাকা পাচার করেন। এ ছাড়া সুমনের ইসলামী ব্যাংকসহ ৪-৫টি বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, যেখানে চোরাকারবারি বা পাচারকারীদের অর্থ স্থানান্তর করা হয়।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপ- কমিশনার মো. শহীদুল্লাহ সময়ের আলোকে বলেন, মার্কিন দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা বাদী হয়ে সুমন মিয়ার বিরুদ্ধে মানব পাচারসহ একাধিক অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার করে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হয়।
সময়ের আলো/আরএস/