ই-পেপার রোববার ১৯ মে ২০২৪
রোববার ১৯ মে ২০২৪

ক্যাশলেস লেনদেন বাড়লে কর ফাঁকি কমবে
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন, ২০২৩, ১২:৪৪ এএম  (ভিজিট : ৩৬৩)
ক্যাশলেস লেনদেন বাড়লে কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ বন্ধ হবে। কারণ ক্যাশলেস লেনদেনের ফলে একজন কত টাকা খরচ করছে, কীভাবে খরচ করছে তা জানা যাবে। এর মাধ্যমে তার আয়ও জানা সম্ভব হবে। আয় যদি করযোগ্য হয় তখন অটোমেটিক সফটওয়্যারের মাধ্যমে শনাক্ত করা সম্ভব হবে। এভাবে করযোগ্য সবাইকে করের আওতায় আনা সম্ভব হবে। ক্যাশলেস লেনদেন হলো টাকা ছাড়া লেনদেন। সেটা কার্ডের মাধ্যমে বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হতে পারে। 

বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট এবং আয়কর আইন (আইটিএ) ২০২৩-এর খসড়া নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ক্যাশলেস লেনদেনের তাগিদ দেয় ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ফিকি)।

সংস্থাটি বলছে, ক্যাশলেস সোসাইটি গড়ার রোডম্যাপ প্রয়োজন। যাতে এটি সবাই অনুসরণ করতে পারে। করপোরেট এবং সংস্থাগুলোর জন্য নগদ লেনদেন সীমিত করা দেশের উন্নয়নকে সীমাবদ্ধ করবে, কারণ বাংলাদেশ এখনও পুরোপুরি নগদহীন লেনদেন করার ক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি। সরকারের উচিত কোম্পানিগুলোর নগদ লেনদেনের জন্য একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ধারণ না করে তার খরচের ন্যূনতম শতাংশ ব্যয় করার অনুমতি দেওয়া। যেন পরবর্তী ৫ বছরে ধীরে ধীরে তারা শতভাগ নগদহীন লেনদেনের লক্ষ্য অর্জন করতে পারে।

ফিকি সভাপতি নাসের এজাজ বিজয় বলেন, আয়কর রিটার্ন জমা হওয়ার পর অ্যাপের মাধ্যমে কনফারমেশন বার্তা পাওয়া যায়। প্রচলিত আয়কর আইন সেটাকে গ্রহণযোগ্য প্রমাণ হিসেবে মানে না। ডিজিটাল যুগে অ্যাপে পাওয়া বার্তাকে গ্রহণ করা প্রয়োজন। গাড়ি কেনার ওপর যে কর আরোপ হয়েছে, তা শুধু ব্যক্তির ওপর বহাল করা উচিত বলে মনে করে ফরেন চেম্বার।

তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের আগে নিট সুবিধা খোঁজেন। আমরা বারবার করের হার কমাতে এবং কর নেট প্রসারিত করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করেছি। প্রস্তাবিত বাজেট বিনিয়োগকারীদের জন্য অনুকূল নয় এবং এটি বাংলাদেশের ব্যবসা এবং কর্মীদের জন্য প্রভাব ফেলবে।’

নাসের এজাজ বিজয় বলেন, ‘আমাদের সরকার যে প্রগতিশীল পরিবর্তনগুলো বাস্তবায়নের দিকে নজর দিচ্ছে তা প্রশংসনীয়। তবে কিছু বিধান বাস্তবায়ন হলে ব্যবসা এবং ব্যক্তির প্রবৃদ্ধির হার কমে যেতে পারে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মোবাইল ফোনের ওপর আরোপিত ভ্যাট এবং লোকসানে থাকা কোম্পানিগুলোর ওপর করের বোঝা বাড়ার কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। সম্ভাব্য প্রতিকূল পরিস্থিতি এড়াতে পারে এমন সমাধানের বিষয়ে আমাদের কিছু সুপারিশ রয়েছে। আমরা আশা করি সুপারিশগুলো বিবেচনায় নেওয়া হবে এবং চেম্বারকে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অব্যাহত সমর্থন রেখে করবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ করে দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, খসড়া আয়কর আইন (আইটিএ) ২০২৩-এর বিধানগুলোর গভীর ও বিস্তৃত পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। কারণ এই আইনের কিছু বিধান আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর বিবেচনায় অযৌক্তিক বলে মনে হয়।

প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, প্রণোদনা বোনাস অতিরিক্ত লভ্যাংশ হিসেবে বিবেচিত হবে। ফিকির পর্যালোচনা অনুসারে, এটি কোম্পানির ওপর আরও করের বোঝা চাপিয়ে দেবে এবং পরে কর্মচারীদের উপার্জনের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। ব্যবসায়িক ক্ষতির বিপরীতে অন্য আয় সচল রাখার অনুমতি না দেওয়া করের চেতনার বিরুদ্ধে যায়। পাশাপাশি বিদেশি ঋণের সুদের ওপর করের বিধান এবং তৃতীয় পক্ষের বিক্রেতার দ্বারা আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণ প্রদানে ব্যর্থতার জন্য তার সম্পূর্ণ পারিশ্রমিক দিতে অনুমোদন দেওয়ার বিধানটি বাদ দেওয়া উচিত।

ফিকি আশা করেছিল নতুন আইনে ন্যূনতম কর বিধানগুলো ধীরে ধীরে প্রত্যাহার করা হবে। তার পরিবর্তে সেগুলো বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিশেষ করে কার্বোনেটেড পানীয় শিল্পের (বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রি) ন্যূনতম কর ০.৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে মোট প্রাপ্তির ৫ শতাংশ (৮ গুণ বৃদ্ধি) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যার ফলে কোমলপানীয়ের দাম ৩০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পাবে। এতে সাধারণ মানুষের আগ্রহ কমে যাবে। বেচাকেনা কম থাকার কারণে সরকারি কর আদায় কমে যাবে। যা বিদেশি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানকে প্রভাবিত করবে বলে মত ফিকির। তাই এই শিল্পের বিকাশের সুযোগ দিতে সরকারকে ন্যূনতম কর ১ শতাংশ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এই খাতে ইতিমধ্যে ৫-১০ শতাংশ তত্ত্বের পাশাপাশি পরোক্ষ কর ৪৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ দিতে হয়, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। 

সম্পত্তির কর কমিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছে ফিকি। সংগঠনটি বলছে, সম্পত্তির ওপর বর্ধিত কর জনগণকে দলিলে প্রকৃত সম্পত্তির মূল্য না লিখে মৌজা রেট লিখতে প্রণোদিত করবে। এটি সরকারকে করের বিশাল একটি উৎস থেকে বঞ্চিত করতে পারে। যে কারণে সম্পত্তি কর লেনদেনের খরচ বৃদ্ধি করার পরিবর্তে তা যথেষ্ট পরিমাণে কমিয়ে আনা উচিত এবং বাজার মূল্য প্রতিফলিত করার জন্য মৌজা মূল্যকে পর্যায়ক্রমে আপডেট করতে হবে।




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close