ই-পেপার শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪
শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪

সুস্থ হয়ে দ্রুতই ফিরবেন অফিসে
মুক্তি পেলেন ইভ্যালির রাসেল
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৩, ৩:০৯ পিএম আপডেট: ১৯.১২.২০২৩ ৯:৫৬ পিএম  (ভিজিট : ৩১৭৬)
কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ছেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল। সোমবার বিকেল ৫টার দিকে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান। এ সময় ইভ্যালি মার্চেন্ট এন্ড কঞ্জ্যুমার্স কোর্ডিনেশন কমিটির নেতৃবৃন্দ মো. রাসেলকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
ইভ্যালি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ইভ্যালি সূত্রে আরো জানা যায়, দীর্ঘদিন কারাগারে থাকায় তিনি শারিরীকভাবে কিছুটা অসুস্থ। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়েই তিনি দ্রুতই ধানমন্ডিস্থ ইভ্যালি কার্যালয়ে আসবেন।

ইভ্যালি সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রায় ২ বছর ৩ মাস পর কারামুক্ত হয়ে তিনি তার মোহাম্মদপুরের বাসায় চলে যান। তবে মো. রাসেল মুক্তি পাওয়ায় ইভ্যালির কর্মীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। একই সঙ্গে ইভ্যালির গ্রাহক ও পণ্য সরবরাহকারীদের সংগঠন ‘ইভ্যালি মার্চেন্ট এন্ড কঞ্জ্যুমার্স কোর্ডিনেশন কমিটির’ নেতারাও আশা করছেন মো. রাসেলের মুক্তির ফলে ইভ্যালি আবার পূর্ণ উদ্যোমে কার্যক্রম শুরু করবে। একই সঙ্গে সকল গ্রাহক ও মার্চেন্টের পাওন পরিশোধ করে আবারো সারা দেশে পণ্য বিক্রি ও সেবা কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।

কারামুক্তির পর মো. রাসেলকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান, ইভ্যালি মার্চেন্ট এন্ড কঞ্জ্যুমার্স কোর্ডিনেশন কমিটির নেতারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইভ্যালি মার্চেন্ট এন্ড কঞ্জ্যুমার্স কোর্ডিনেশন কমিটির সমন্বয়ক মো: নাসির উদ্দিন, কো-সমন্বয়ক সাকিব হাসান, মো: ফয়সাল ইসলাম, মো: জসিম উদ্দিন এবং ইভ্যালি ফ্যান ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মোফতাছিম বিল্লাহ নাহিদ।

এর আগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির  মুক্তি সিইও মো. রাসেলের মুক্তির বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এর জেলার মো. তরিকুল ইসলাম জানান, সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে মো. রাসেল কারাগার থেকে মুক্তি পান।

তিনি আরও জানান, মো. রাসেল একাধিক মামলায় কারাগারে বন্দি ছিলেন। সব মামলার জামিনের কাগজপত্র কারাগারে এসে পৌঁছালে যাচাই-বাছাই শেষে গতকাল সোমবার বিকেলে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
জানা যায়, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আরিফ বাকের নামের এক গ্রাহক গুলশান থানায় ইভ্যালির মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরদিন বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডের বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

এদিকে, ইভ্যালির অবসায়ন চেয়ে হাইকোর্টের কোম্পানি আদালতে আবেদন করেন ইভ্যালির গ্রাহক ফরহাদ হোসেন। এতে ইভ্যালি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠনেরও আবেদন জানান। ওই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি ও হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট।

গত বছরের ২১ এপ্রিল চেক প্রতারণার নয় মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেলকে জামিন দেন আদালত। ওই দিন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে জামিন পান তিনি। তবে, তার বিরুদ্ধে আরও মামলা থাকায় কারামুক্ত হতে পারেননি রাসেল। তার স্ত্রী শামীমা নাসরিন বর্তমানে জামিনে আছেন। হাইকোর্টের নির্দেশনায় বর্তমানে তিনি ইভ্যালির দায়িত্বে আছেন। এর আগে তিনি ইভ্যালির চেয়ারম্যান ছিলেন।

২০২১ সালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সম্পদ ও দায়ের হিসাব দাখিল করে ইভ্যালি। সেখানে উল্লেখ করা হয়, ইভ্যালির মোট দায় ৫৪৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে এক কোটি টাকা শেয়ারহোল্ডার হিসেবে কোম্পানির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল কোম্পানিকে দিয়েছেন। বাকি ৫৪৩ কোটি টাকাই কোম্পানিটির চলতি দায়।

ইভ্যালির হিসাব অনুযায়ী, দায়ের বিপরীতে এর চলতি সম্পদ রয়েছে ৯০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। আর সম্পত্তি, স্থাপনা ও যন্ত্রপাতি মিলিয়ে রয়েছে ১৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। মোট ১০৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকার এ দুটির যোগফলকে দেখানো হচ্ছে স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে। মোট দায় ৫৪৩ কোটি টাকা থেকে এ অঙ্ক বাদ দিলে বাকি থাকে ৪৩৮ কোটি টাকা। যাকে ইভ্যালি বলছে তার অস্থাবর সম্পত্তি। বিবরণী মেলাতে ইভ্যালি দেখিয়েছে অস্থাবর সম্পত্তি ৪৩৮ কোটি টাকার মধ্যে ৪২৩ কোটি টাকা হচ্ছে ইভ্যালির ব্র্যান্ড মূল্য, আর ১৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা হচ্ছে অদৃশ্যমান সম্পত্তি। কোম্পানিটি নিজের ব্র্যান্ড মূল্য নিজেই নির্ধারণ করে।

এখন ইভ্যালি চালাচ্ছে পরিচালনা পর্ষদ

হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত ৫ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ এখন পরিচালনা করছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি। পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট এই পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন কোম্পানিটির সাবেক চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন, তার মা ফরিদা আক্তার ও বোনের স্বামী মামুনুর রশীদ। এছাড়া আছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কাজী কামরুন নাহার ও ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইক্যাব) সহসভাপতি মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন।
 
জানা যায়, গত বছরের গত ২৪ আগস্ট বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে আদেশ দিয়ে একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় পর্ষদ সভায় শামীমা নাসরিন, তার মা ও ভগ্নিপতিকে ইভ্যালি পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে বলেন এবং ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এফিডেভিট আকারে তা হাইকোর্টকে জানাতেও বলা হয় আদেশে।

জানা যায়, আদালতের আদেশ অনুযায়ী ইভ্যালির ওপর একটি নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করে সাবেক বিচারপতি সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের নেতৃত্বে বিদায়ী পর্ষদ। এতে তারা উল্লেখ করেন, ইভ্যালির মালিকানা ছিল এর চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেলের নামে। দুজনের প্রত্যেকেই প্রতিষ্ঠানটির ৫০ শতাংশ শেয়ারের মালিক।   

গত বছরের সেপ্টেম্বরের ১১ মাস আগে ইভ্যালির জন্য উচ্চ আদালতের গঠন করে দেওয়া ৫ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ পদত্যাগ করার পর ওই নতুন পর্ষদ দায়িত্ব নেন। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচ এম সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ছিলেন ওই পর্ষদের প্রধান। পর্ষদে অন্যদের মধ্যে ছিলেন।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি   মো. রাসেল   কারামুক্ত   




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close