ই-পেপার বৃহস্পতিবার ২ মে ২০২৪
বৃহস্পতিবার ২ মে ২০২৪

চট্টগ্রামে ফের শুরু হচ্ছে চায়না ইকোনমিক জোনের কার্যক্রম
প্রকাশ: রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২২, ১১:১৪ এএম  (ভিজিট : ৫০১)
আনোয়ারায় ফের শুরু হচ্ছে চায়না ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম। বৃহস্পতিবার চীনের চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনের সঙ্গে এ সংক্রান্ত এক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা)। 

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বেজা কার্যালয়ে এই সমঝোতা স্মারকে সই করেন চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ঝাও লিয়ানঝি এবং বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন। ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং এ সময় উপস্থিত ছিলেন। শনিবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন চায়না অর্থনৈতিক অঞ্চল ইকোনমিক জোনের চায়না হারবাং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দায়িত্বরত কর্মকর্তা বিনয় বাড়ৈ।  প্রকল্পের সার্বিক বিষয়ে তিনি বলেন, নানা জটিলতার কারণে ২০১৯ সালের পর থেকে ইকোনমিক জোনের কাজ মোটামুটি বন্ধ ছিল। এখন নতুন চুক্তি হয়েছে। 

কার্যক্রম ফের শুরু হবে। তিনি বলেন, চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলটিতে ওষুধ, তৈরি পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, রাসায়নিক, স্বাস্থ্য সরঞ্জাম, প্লাস্টিক পণ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, ফার্নেস ও সিমেন্ট কারখানা হতে পারে। সেখানে স্থাপিত হবে ৩৭১টি শিল্প-কারখানা। এতে দেশের প্রায় ২ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রায় আট বছর আগে এ নিয়ে চূড়ান্ত পরিকল্পনা করার পর উদ্যোগটিতে হঠাৎ ভাটা পড়ে। এরপর উদ্যোগটি আবার নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছে বিশে^র অন্যতম প্রধান এই অর্থনৈতিক পরাশক্তির দেশ চীন। চীনের এই ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠার জন্য ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ৭৮৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।

এর মধ্যে প্রায় ২০০ একর ভূমি উন্নয়ন করা হয়েছে। আনোয়ারার পিএবি প্রধান সড়ক কালাবিবির দীঘি থেকে ইকোনমিক জোন পর্যন্ত এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থের এবং অন্যটি বৈরাগ থেকে ইকোনমিক জোন পর্যন্ত চার লেনের এক কিলোমিটার সড়ক নির্মিত হয়েছে। নির্মিত হয়েছে বৈরাগ অংশে প্রায় এক কিলোমিটার সীমানাপ্রাচীর। সমান করা হয়েছে প্রকল্প এলাকার ২০০ একর পাহাড়ি টিলা। তা ছাড়া প্রকল্পের অধিগ্রহণ করা ভূমিও চিহ্নিত করা আছে। 

প্রকল্প এলাকাটি কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন টানেল থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯ কিলোমিটার, শহর থেকে ২৮ কিলোমিটার এবং শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে ৪৬ কিলোমিটার দূরে।

প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চায়না ইকোনমিক জোনের অবকাঠামো উন্নয়নে এখনও সীমানাপ্রাচীর পূর্ণাঙ্গ নির্মিত হয়নি। কয়েকজন নিরাপত্তা প্রহরী ও চায়না নিযুক্ত কর্মকর্তা এবং বেজার কর্মকর্তাদের হাজিরা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই।

বেজার তথ্য মতে, ২০০৯ সালে সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারিভাবে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনায় হাত দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি, বেসরকারি, জিটুজি ও বিদেশি অর্থনৈতিক অঞ্চল মিলিয়ে ইতোমধ্যেই ৯৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান চিহ্নিতকরণের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।

এর আগে ২০১৪ সালের জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরকালে চীনা সরকার বাংলাদেশের চট্টগ্রামে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও শিল্পাঞ্চল স্থাপনের আগ্রহ ব্যক্ত করে। ওই সফলে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। 

এর দুই বছর পর ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ঢাকা সফরে এলে ইকোনমিক জোনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এ সময় ঠিক হয় জোনের অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করবে চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড। কিন্তু দীর্ঘদিনেও বেজার সঙ্গে চায়না হারবারের কোনো চূড়ান্ত চুক্তি না হওয়ায় জোনের উন্নয়ন কাজ তেমন হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে প্রায় আট বছর পর চীনা জোনটি স্থাপনে চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তি করল বেজা।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন এ প্রসঙ্গে বলেন, এ উদ্যোগ এক বিশাল কর্মযজ্ঞের সূচনামাত্র। একটি পরিকল্পিত চাইনিজ ইকোনমিক জোন তৈরির মাধ্যমে তার সফল পরিসমাপ্তি ঘটবে। এই জোনের পূর্ণতাদানে চীন সরকার দ্রুত কাজ করতে বদ্ধপরিকর।

/এমএইচ/




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close